মার্কিন অস্ত্র ব্যবসার রাজনীতি 

  আলাউদ্দিন মল্লিক

২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৮ | অনলাইন সংস্করণ

আলাউদ্দিন মল্লিক
জুলে ভার্নের কল্প-গল্প হতে বাস্তবতা 
জুলে ভার্নের 'বেগমের রত্নভাণ্ডার' উপন্যাসে দুটি চরিত্র:ফরাসি চিকিৎসক  ডক্টর সারাসিন আর জার্মান রসায়নবিদ  ডক্টর শুলৎস। তারা এক ভারতীয় রাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে অনেক সম্পদের মালিক হন।  ফরাসি ডক্টর মানুষের জন্য একটি আদর্শ শহর তৈরীর পরিকল্পনা – যেখানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পর্যাপ্ত বায়ু সঞ্চালন সহ পরিকল্পিত আধুনিক নগর নির্মাণ  নিয়ে অগ্রসর হলেও জার্মান ডক্টর একটি বিশাল যুদ্ধ কামান তৈরির কারখানা নির্মাণ করেন।  এই কারখানা হতে বিভিন্ন মাপের কামান তৈরী করে বিক্রি করে রাশিয়া, তুরস্ক, রুমানিয়া, জাপান, ইতালি আর চীনের কাছে।  ফলে বিপু;ল লাভ হতে থাকে।  আর তা হতে একটি দানবীয় কামান তৈরী হচ্ছিল যা দিয়ে ফরাসি ডক্টরের আধুনিক আদর্শ শহরকে ধ্বংস করা যায়। গল্পের শেষটায় জার্মান ডক্টরের ইচ্ছাটি বাস্তবায়িত হয়নি। 

জুল ভার্ন একজন বিখ্যাত ফরাসি লেখক এবং যথেষ্ট শান্তিবাদী; তাই হয়ত জার্মান যুদ্ধবাজ ডক্টর শুলৎস এর  পরিকল্পনাকে তাঁর লেখায় বাস্তবায়ন করেননি।  কিন্তু একটা কথা অত্যন্ত পরিষ্কার যে, যুদ্ধ কামান নির্মাণ কারখানাটি কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থাপিত হয়েছে।  এই গল্পের লেখক সমরাস্ত্র কারখানাটি কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থাপন করে একটি পরিষ্কার মেসেজ দিয়েছেন যে মার্কিন ব্যবসায় অস্ত্র একটি বড় উপাদান।

১৭৭৬ সালের দোসরা জুলাই থমাস জেফারসনের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ভোট হয়, মার্কিন কংগ্রেসে সর্বসম্মতিক্রমে যা ৪ঠা জুলাই গৃহীত হয়। এটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে স্বীকৃত।  ১৭৭৮ সালে ফ্রাঙ্কো-আমেরিকান জোট গঠন করে  যুক্তরাষ্ট্র যার মধ্যে  ছিল ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং স্পেন। এর অধীনে  ফরাসিরা আমেরিকানদের জন্য অনেক সমরাস্ত্র  সরবরাহ করেছিল। এর ফলে ১৭৭৭ সালের অক্টোবরে সারাতোগায় ব্রিটিশ আক্রমণকারী সেনাবাহিনীকে পরাজিত হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রটি শুরুতেই যুদ্ধ জোট তৈরী করেছিল। এরপর ক্রমান্বয়ে বারবারি যুদ্ধ (১৮০১-১৮০৫, ১৮১৫), ১৮১২ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম গ্রেট ব্রিটেন যুদ্ধ (১৮১২-১৮১৫), ক্রিক যুদ্ধ (১৮১৩-১৮১৪), টেক্সাসের স্বাধীনতা যুদ্ধ (১৮৩৬),     মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধ (১৮৪৬-১৮৪৮), মার্কিন গৃহযুদ্ধ (১৮৬১-১৮৬৫), ফিলিপাইন – আমেরিকান যুদ্ধ ( ১৮৯৯ - ১৯০২) এর মাধ্যমে মার্কিনিরা ক্রমাগত নিজের অঞ্চলে একক শক্তি হয়ে উঠেছিল।  এর পুরোটাই আসলে যুদ্ধ করা আর সমরাস্ত্র ব্যবসা। 

শুরু হতেই মার্কিনিরা ব্যবসাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এসেছে; ১৮০১-১৮০৫ পর্যন্ত  রিপলিটান যুদ্ধ এবং বারবারি কোস্ট ওয়ার নাম পরিচিত। এই যুদ্ধটি প্রথম পর্যায়ে ১৮০১-১৮০৫ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সুইডেন চারটি উত্তর আফ্রিকান রাজ্যের (মরোক্কো, আলজিয়ার্স, তিউনিস, এবং ত্রিপোলি) বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল । মার্কিন অংশগ্রহণের কারণ ছিল বারবারি রাজ্যের জলদস্যু কর্তৃক আমেরিকান বণিক জাহাজ জব্দ করা এবং ক্রুদের মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখা।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর কাছে বারবারি শাসকরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দাবি করে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন এই শ্রদ্ধা জানাতে অস্বীকার করেন। ১৮০০ সাল থেকে সুইডেন ত্রিপোলিটানদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই যুদ্ধটি এই সাগর অঞ্চলে ১৮১৫ সালে সমাপ্ত হয় মার্কিনিদের প্রাধান্য বিস্তারের মাধ্যমে।  আর এই উদাহরণগুলো প্রমান দেয় মার্কিনিদের যুদ্ধবাজ প্রবণতা আর যুদ্ধ অর্থনীতির উপর নির্ভরশীলতার।

জমে উঠেছে বৈশ্বিক অস্ত্রের বাজার
যুদ্ধ ও সামরিক উত্তেজনার জেরে জমজমাট রূপ নিয়েছে বৈশ্বিক অস্ত্রের ব্যবসা। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ, তাইওয়ান নিয়ে চীন-মার্কিন টানাপোড়েন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী অস্ত্র নির্মাতাদের জন্য সাফল্য নিয়ে এসেছে। প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে বিভিন্ন দেশ। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা ব্যয় শুধু ২০২২ সালে ১৩ শতাংশ বেড়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী মোট প্রতিরক্ষা ব্যয় সর্বোচ্চ ২ লাখ ২৪ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। রয়টার্স। ২০২২ সালে ব্রিটেন দ্বিগুণ পরিমাণে অস্ত্র রপ্তানি করেছে। এর মোট পরিমাণ ছিল ৮৫০ কোটি ইউরো। রপ্তানি বাড়ার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে কাতার ও সৌদি আরব। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা আশা করছেন, অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন প্রযুক্তি প্রদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এইউকেইউএস চুক্তিসংক্রান্ত আরও চুক্তির সুযোগ তৈরি করবে। ইউরোপের দৌরাত্ম্যের সঙ্গে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠান। তারা চীনের বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য মরিয়া। ২০২২ সালে কেবল পোল্যান্ডের সঙ্গে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ডলারের চুক্তি হয়।

২০২২ সালে, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI) বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় ২.২৪ ট্রিলিয়ন ডলার অনুমান করেছে, যা SIPRI দ্বারা রেকর্ড করা সর্বোচ্চ স্তর। ২০১৩-২২  দশকে বিশ্বব্যাপী ব্যয় ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। SIPRI অনুসারে, ২০২২ সালে শীর্ষ ১০০ টি বৃহত্তম অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং সামরিক পরিষেবা সংস্থাগুলির সম্মিলিত অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫৯৭ বিলিয়ন ডলার।  ইনস্টিটিউটের মতে ২০১৮-২২ সালে পাঁচটি বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, চীন এবং জার্মানি। একসাথে, তারা ২০১৮-২২ সালে বিশ্বের অস্ত্র রপ্তানির ৭৬% সরবরাহ করেছে।

প্রতিবছর বৈশ্বিক অস্ত্র বাজার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুইডেনের প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)। প্রতিষ্ঠানটির সবশেষ হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়, বিশ্বে অস্ত্র রফতানিতে বরাবরের মতো শীর্ষ দেশের তালিকায় প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের নাম। বর্তমানে বিশ্বের ৬৬টি দেশ অস্ত্র রফতানি করে। ২০১৯-২৩ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিশ্বে অস্ত্র রফতানিতে শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে -- যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি।  

 বিশ্বের ৭৫ শতাংশ অস্ত্রের বাজার এ পাঁচ দেশের হাতে। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, আফ্রিকায় জাতিগত সংঘাত, লাতিন দেশগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম -- এসব কিছুর পেছনে রয়েছে বিশাল এ অস্ত্র বাজারব্যবস্থার নিগূঢ় স্বার্থ।


অর্থনীতির ভিত্তি যখন অর্থ আর অস্ত্রের ব্যবসা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ অস্ত্র উৎপাদক ও বিপণনকারী দেশ। অন্যান্য দেশ, যথা রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্সও অস্ত্র ব্যবসায় নিয়োজিত; কিন্তু বিশ্ব অস্ত্র বাজার মূলত নিয়ন্ত্রিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা। বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি বিভিন্ন পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। যেমন মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের অর্থনীতি বহুলাংশে পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। আবার বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল মূলত পোশাকশিল্প, বিভিন্ন দেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা এবং কৃষির ওপর। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আয়ের প্রধান উৎস তাদের তেল সম্পদ। আবার কালের প্রবাহে এই ভিত্তি সদা পরিবর্তনশীল; অর্থাৎ দেশগুলোর সেই পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা পরিবর্তিত হয়ে অন্য ধরনের পণ্যের দিকে চলে যায়। একসময় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ছিল পাট ও পাটজাত পণ্য। পাটকে বলা হতো সোনালি আঁশ। কিন্তু বর্তমানে রপ্তানি বাণিজ্যে পাটের ভূমিকা খুবই নগণ্য। বর্তমান পৃথিবীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরস্পর নির্ভরশীল। তাই পৃথিবীর কোনো দেশে বা জায়গায় অর্থনৈতিক কোনো বিপর্যয় দেখা দিলে অন্য দেশগুলোকেও প্রভাবিত করে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্থ ও মুদ্রাব্যবস্থা।

দেশে দেশে যুদ্ধবিগ্রহ না হলে তো আর অস্ত্র কেনার প্রয়োজন পড়ে না। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই অস্ত্র উৎপাদন করে না। যারা অস্ত্র উৎপাদন করে না, তাদের চড়া দামে অস্ত্র কিনতে হয় উৎপাদনকারী দেশগুলোর কাছ থেকে। দেশের মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধির জন্য যে অর্থ ব্যবহৃত হতে পারত, তা ব্যয়িত হয় মারণাস্ত্র কেনার কাজে। তাই দেশে দেশে সংঘাত-সংঘর্ষ বাধিয়ে অস্ত্র ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে দেশের অর্থনীতিকে তরতাজা করে তোলার সেই আদিম কৌশল আজও বিদ্যমান। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না বাধলে আজ ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠত এবং উঠছিলও। কিন্তু আজ ন্যাটোতে কে কার আগে যোগ দেবে, তা যেন এক প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। রাশিয়ার হুমকি উপেক্ষা করে একে একে আবেদন-নিবেদন করে চলেছে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইউরোপের দেশগুলো, এমনকি যারা দীর্ঘদিন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রেখে চলছিল। শুধু ইউরোপ নয়, পৃথিবীর সব অঞ্চলই এখন যথাসাধ্য তাদের অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত। কারণ একটাই—কে কখন কাকে আক্রমণ করে বশে। আর পৃথিবী এখন আবার দুই মেরুতে বিভক্ত হয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। প্রত্যেকেই একে অপরের শত্রু। তাই একদিকে ক্ষুধা আর দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে, অন্যদিকে রমরমা অস্ত্র ব্যবসার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

অস্ত্র বাণিজ্য বেড়েছে ইউরোপে
সর্বশেষ পাঁচ বছরে (২০১৯-২৩ সাল) পূর্ববর্তী একই সময়ের তুলনায় বৈশ্বিক অস্ত্র বাণিজ্য কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে একই সময়ে ইউরোপে অস্ত্র আমদানি বেড়েছে প্রায় ৯৪ শতাংশ। একই সঙ্গে ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধ এ সময় অস্ত্র বাণিজ্যকে প্রভাবিত করেছে বলে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। (সূত্র: ইউরো নিউজ)

ইউরোপে ২৩ শতাংশ হিস্যা নিয়ে ২০১৯-২৩ সাল মেয়াদে বিশ্বের বৃহত্তম আমদানিকারক ছিল ইউক্রেন। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপের মোট অস্ত্র আমদানির ১১ শতাংশ দেশটির দখলে। নেদারল্যান্ডস আমদানি করেছে ৯ শতাংশ।  এ সময়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর আমদানি করা অস্ত্রের ৫৫ শতাংশ সরবরাহকারী ছিল যুক্তরাষ্ট্র, ২০১৪-১৮ সাল সময়সীমায়  বৈশ্বিক অস্ত্র বাণিজ্যে এ হিস্যা ছিল ৩৫ শতাংশ। সর্বশেষ পাঁচ বছরে ইউরোপে আমদানি করা অস্ত্রের অন্যান্য উৎস হলো এশিয়া, ওশেনিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য। ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রনির্ভরতা প্রসঙ্গে এসআইপিআরআইয়ের ডিরেক্টর ড্যান স্মিথ বলেন, ‘প্রযুক্তি, সামরিক ও ব্যয়-সম্পর্কিত বিষয়ের পাশাপাশি ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যসহ অনেক কারণে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র আমদানি করে। ভবিষ্যতে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের সঙ্গে ইউরোপীয় অস্ত্র সংগ্রহের নীতি বদলে যেতে পারে।’ সর্বশেষ পাঁচ বছরে অস্ত্র বিক্রেতা হিসেবে এগিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। ওয়াশিংটন ২০১৪-১৮ সালের তুলনায় ২০১৯-২৩ সাল মেয়াদে ১৭ শতাংশ এবং প্যারিস ৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখেছে। এ সময় ১০৭টি দেশে অস্ত্র সরবরাহ করে মোট বৈশ্বিক রফতানির ৪২ শতাংশ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ঝুলিতে। অন্যদিকে ভারত, কাতার ও মিসরে যুদ্ধবিমান সংগ্রহের কারণে ফ্রান্সের রফতানি বেড়েছে। এছাড়া প্রথমবারের মতো অস্ত্র রফতানিতে রাশিয়ার তুলনায় এগিয়ে গেছে ফ্রান্স। এবার রাশিয়ার রফতানি কমেছে ৫৩ শতাংশ। ২০১৯ সালের ৩১টি দেশে মস্কো অস্ত্র রফতানি করলেও গত বছর নেমে আসে ১২-তে। এ বিষয়ে এসআইপিআরআইয়ের গবেষক ক্যাটরিনা জোকিক বলেন, ‘শক্তিশালী বৈশ্বিক চাহিদার সুযোগ ব্যবহার করছে ফ্রান্স। ইউরোপের বাইরে যুদ্ধবিমান বিক্রিতে বিশেষভাবে সফল হয়েছে দেশটি।’ 

 ফরাসি অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ভারত, যা দেশটির মোট রফতানির প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে ভারতের অস্ত্রের প্রধান সরবরাহকারী ছিল রাশিয়া। মস্কো থেকে মোট আমদানির ৩৬ শতাংশ পেয়েছে দিল্লি।

পাঁচ বছরে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে ২৩ ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম।  

২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে অন্তত ২৩ ধরনের আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম যুক্ত হয়েছে। ফোর্সেস গোল–২০২৩–এর আলোকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এসব যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনা বা সংযোজন করা হয়েছে।  সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮–২০২৩ সালের মধ্যে সেনাবাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে ১১ ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম। এর মধ্যে আছে চীনের লাইট ট্যাংক, তুরস্কের বিভিন্ন ধরনের আরমার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), তুরস্কের মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (এমএলআরএস), সিঙ্গাপুরের অটোমেটিক গ্রেনেড লঞ্চার (এজিএল), সার্বিয়া ও তুরস্কের রেজিমেন্ট ফিল্ড আর্টিলারি ওয়েপন সিস্টেম, স্পেনের ফিক্সড উইং মিডিয়াম ইউটিলিটি এয়ারক্র্যাফট, দক্ষিণ আফ্রিকার সেমি অটোমেটিক গ্রেনেড লঞ্চার (এসএজিএল), তুরস্কের আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি), চীন ও সুইজারল্যান্ডের ব্যাটারি রাডার কন্ট্রোল এয়ার ডিফেন্স গান (আরসিজি) সিস্টেম, জার্মানির আরমার্ড রিকভারি ভেহিকেল (এআরভি) ফর ট্যাংক এবং চীনের সারফেস টু এয়ার মিসাইল (এসএএম) সিস্টেম।  নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে আট ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম। এর মধ্যে আছে খুলনা শিপইয়ার্ড ও চীনের তৈরি পেট্রল ক্র্যাফট (পিসি), চীনের ফ্রিগেট, চীনের বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও সরঞ্জাম, নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ডের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, ইতালির ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক (এলসিটি), কানাডার ভি–স্যাট (ভিএসএটি) নেটওয়ার্ক সিস্টেম এবং সাবমেরিন বেস বিএনএস শেখ হাসিনা নির্মাণ। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে চার ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম। এর মধ্যে আছে যুক্তরাজ্যের এমকে–৫ এয়ারক্র্যাফট, ফ্রান্সের এয়ার ডিফেন্স রাডার, ইতালির ফিক্সড উইং আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল এবং জার্মানির প্রাইমারি ট্রেইনার এয়ারক্র্যাফট।

আর্মস ট্রেড ট্রিটি 
অস্ত্র বাণিজ্যের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে গত ২০১৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আর্মস ট্রেড ট্রিটি গ্রহণ করা হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তা কার্যকর হয়। এ চুক্তির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর জন্য হালকা অস্ত্র, মিসাইল লঞ্চার ও যুদ্ধজাহাজ বিক্রি এবং হস্তান্তরের বিধিবিধান নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত ১০০টির বেশি দেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে অথবা এর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। কিন্তু গত বছর এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্প মূলত অস্ত্র বিক্রি কমে যাওয়ার কারনে এ কাজটি করে। চীনও এর আগে এ চুক্তির প্রতি নিজেদের সমর্থন থেকে সরে এসেছিল। কিন্তু সম্প্রতি শেষ হওয়া ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির সভায় এ চুক্তিতে যোগ দেয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে এটি আইওয়াশ মনে করছেন অনেকে।

যত চুক্তি হোক না কেন বিশ্ব ব্যাপি অস্ত্র বাণিজ্য থামবে না। লাভ যে বেশি। আমেরিকা তো এখন বাণিজ্য ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অস্ত্র বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের আগে দেশের অর্থনীতি নিয়ে বেশ তৎপর।  এরই মধ্যে ট্রাম্প জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরবের মতো মিত্র দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো বেশি পরিমাণে অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। হালে শুরু হয়েছে ইসরাইলকে নিয়ে আমেরিকার কুটনীতি। আরব দেশগুলোর সাথে চলছে কথিত শান্তি চুক্তি।মনে করা হচ্ছে এর নেপথ্যে রয়েছে অস্ত্র ব্যবসা।  অস্ত্র কেনাবেচার জন্য এ পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক অস্ত্র আমিরাতে আসার পথ সুগম করার জন্য এ কান্ড চলছে। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির আর্মস এন্ড সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক উইলিয়াম হার্টাং বলেছেন, এই চুক্তির মূলে রয়েছে অস্ত্র বিক্রি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিভিন্ন প্রকার  যুদ্ধবিমান, সামরিক সরঞ্জাম, ড্রোন কিনতে চাইছে অনেকদিন ধরে।  ইসরায়েল এর জন্য আমেরিকা তা দিতে পারছিল না। এখন আমেরিকা বা ইসরাইল দু’দেশের অস্ত্র যাবে মধ্যেপ্রাচ্যে।

বিশ্বে অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে এখনও আমেরিকা অন্যতম। তাদের মূল ব্যবসাই হচ্ছে অস্ত্র বাণিজ্য। অস্ত্র বিক্রির পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে শতকরা প্রায় ৪৫ ভাগ বেশি অস্ত্র বিক্রি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। টাকার অংকে প্রায় ৭৫০০ কোটি ডলার। ইউএস ফরেন মিলিটারি সেলস প্রোগ্রামের ফোরম অন দ্য আর্মস ট্রেডের (এফএটি) হিসাবে দেখা গেছে বিগত সময়ের তুলনায় এটি বেড়ে চলেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা সমানে কিনছে অস্ত্র। গত ক’বছর ধরে এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০১৮ সালে যেখানে বিক্রির পরিমান প্রায় ১২০০ কোটি ডলার, সেখানে ২০১৯ সালে  তা উন্নিত হয়েছে ২৫০০ কোটি ডলারে।  সবচেয়ে মজার বিষয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ মরক্কো সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনেছে।  আমেরিকা থেকে ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত কিনেছে প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে।ইসরাইলের চুুক্তি হওয়া বাহরাইন কিনেছে প্রায় ৩৩৮ কোটি ডলারের অস্ত্র। আর কাতার কিনেছে ৩০০ কোটি ডলারের অস্ত্র এবং সৌদি আরব  ২৮০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। বাহরাইন  এখন সৌদি আরবকে অনুসরণ করতে চায়।  ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে এফ -১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। আর বাহরাইনে ঢুকবে এখন যুদ্ধ বিমানটি । হার্টাং এর মতে,, বাহরাইনের কাছে অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে মানবাধিকারের প্রতি কোনো শর্ত ছাড়াই।

মানবতা আর গণতন্ত্রের ফেরি ব্যবস্যার জন্য 
মার্কিন প্রভাববলয় সারা পৃথিবীব্যাপী - বিশেষত কোল্ড ওয়ার ১.০ (মার্কিন-সোভিয়েত / রাশিয়ার মধ্যকার বিরোধ) শেষে গত শতকের নব্বইর দশক হতে এই শতকের দ্বিতীয় দশক পর্যন্ত ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে পেতে দুনিয়ার একক ক্ষমতায়  আসীন হয়। কথায় বলে, পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে উঠার পর পরবর্তী পদক্ষেপ হল নিচে নেমে যাওয়া।  আর, শুন্যস্থান সব সময়ই পূরণ হয়ে যায়।  তাই সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পরিবর্তে জায়গা নিয়েছে চীন; আর প্রতিযোগিতা হচ্ছে অর্থনীতিতে - যা কোল্ড ওয়ার ২.০ নামে পরিচিত।  এই প্রতিযোগিতায় মার্কিনিরা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে।  মানবতা আর গণতন্ত্রের ফেরি কোন কাজ করছে না। ক্রমাগত, দেশগুলো মার্কিনিদের প্রভাব হতে বেরিয়ে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে এখন মার্কিনিদের প্রভাব প্রায় শুন্য; মায়ানমার সহ  পশ্চিম এশিয়ায় সবগুলো দেশেও তাই। আফ্রিকান ইস্ট কোস্ট আর সাব-সাহারা অঞ্চলে চীন আর রাশিয়ার প্রভাব ক্রমাগত বাড়ছে।  আর, ল্যাটিন আমেরিকায় হুগো শাভেজের ভেনিজুয়েলার হাত ধরে অন্যান্য দেশগুলোতেও মার্কিন প্রভাব একেবারে তলানিতে।  আসলে, অর্থনীতিতে আর বিশ্ব ব্যবসা-বাণিজ্যে একবার পিছিয়ে গেলে সবকিছুইতে পরাজিত হতে হয়।  তখন আর মানবতা আর গণতন্ত্র ফেরি করলেও কোন বাড়তি লাভ হয় না।

মার্কিনিদের দ্বিচারিতা 
বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র আর মানবতার ফেরিওয়ালা মার্কিন প্রশাসন আর ক্ষমতার লোকজন আর ব্যবসায়ীরা বিশ্বব্যপি শুধুই নিজেদের ব্যবসার লাভ ছাড়া আর কোন বিষয় গুরুত্ব পায়না। ২০২২ এর গণতন্ত্রের সম্মেলনের দাওয়াত পায়নি চীন; কারণ, চীনে কোন গণতন্ত্র আর মানবতা নাই। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদির রামরাজ্যের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন ভারত, মধ্যপ্রাচ্যের দুষ্ট ক্ষত ইসরাইল আমন্ত্রিত।  পাকিস্তান, ঘানা, কেনিয়া, মেক্সিকো , নাইজেরিয়া, নাইজার, পেরু, সেনেগাল  ইত্যাদি দেশগুলোর মানবতা আর গণতন্ত্রের অবস্থান বিচারে চীন বা বাংলাদেশ দাওয়াত পেতেই পারত।  কিন্তু, ব্যবসা-বাণিজ্য আর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য কিছু দেশকে অপাংতেয় করে রাখার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়নি।  যারা আমন্ত্রণ পেয়েছেন, তাদের কি বাড়তি উপকার হয়েছিল জানা যায়নি; তবে, অর্থনৈতিক কোন উন্নতি হয়নি।  হয়ত নিজ দেশে কিছুটা রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছে।

ওস্তাদের মাইর শেষ রাতে 
গত প্রায় অর্ধযুগ  ধরে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সম্ভাবনা আগেই অনুমান করেছিল বলেই মনে হয়।  পাশ্চাত্য দুনিয়ার মোড়ল মার্কিনিদের পক্ষে নানা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কাজ করে।  তারা নিশ্চয়ই এক দশক আগেই এ বিষয় নিয়ে সতর্ক করেছিল; তার সাথে উদ্ধারের উপায় বাতলে দিয়েছে।  আর তাই পশ্চিমা বিশ্ব এবং তার মোড়ল হিসেবে মার্কিনিরা  তখন থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে; আর তাই, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে ২০২৩ হতে - এতে রাশিয়া ব্যস্ত হয়ে আছে।  মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ আর সর্বশেষে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর সম্ভাবনা - ফলস্বরূপ, দুইটি যুদ্ধ মানে - প্রচুর অস্ত্র বিক্রি। ইউক্রেনকে ন্যাটোতে নেয়াটা জরুরি ছিল না; কিন্তু যুদ্ধটা  শুরু হয়ে গেছে। ইউরোপীয় ধনী দেশগুলো ইতিমধ্যেই প্রচুর অস্ত্র কিনে ফেলেছে।  আর দ্বিতীয় যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে হতে হবে- তাই ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ; এবং শেষ পর্যন্ত ইরানকে সরাসরি সংযুক্ত করা - এইটাও প্রায় করে ফেলা হয়েছে।
কল্পনার খাতিরে, ধরা যাক, রাশিয়া  ইউক্রেনকে যুদ্ধে হারিয়ে জয়লাভ করল; কিন্তু তাতে প্রাশ্চাত্য সহায়তা থাকার কারণে সময় লাগবে। ফলে রাশিয়ার প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে - যে ক্ষতি পূরণের ক্ষমতা রাশিয়ার নেই; অথবা, প্রচুর সময় লাগবে।  আর ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ইরান ক্ষতিগ্রস্ত হবে; পুরো মধ্যপ্রাচ্য আবার মার্কিনিদের প্রভাব ফিরে  আসবে। অস্ত্র বিত্রুয় আর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে ব্যবসা-বাণিজ্যে আবার একক প্রভাব ফিরে পাবে।

 

আলাউদ্দিন মল্লিক : প্রধান সমন্বয়ক; আমরা ৯৯ শতাংশ (আপহোল্ড ৯৯) ।

এই বিভাগের আরো সংবাদ